শনিবার, আগস্ট ২, ২০২৫
No menu items!
spot_img

নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি ড্রেনের কাজ, জলাবদ্ধতায় ভুগছে শহরবাসী

জেলা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে পৌর এলাকায় ১৭ হাজার ১৮৮ মিটার ড্রেনের কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ। ৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এ ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জুনে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে। kch, নির্ধারিত সময়ে ড্রেনের কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর জেরে জলাবদ্ধতায় থাকছে শহরবাসী। ঘটনাটি পটুয়াখালী জেলা শহরের।

জানা গেছে, বৃষ্টি ও জোয়ারের উচ্চতা বাড়লেই পানি প্রবেশ করে পটুয়াখালী শহরে। খুব দ্রুত সময়ে পানি প্রবেশ করলেও তা নামতে লাগে দীর্ঘ সময়।  আর এতেই ভোগান্তিতে পড়ে শহরবাসী। এমতাবস্থায় জেলা শহরের পৌরসভা এলাকায় জলাবদ্ধাতা নিরসনে ড্রেনের কাজ শুরু করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। কোস্টাল টাউন ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের আওতায় নেওয়া এ প্রকল্প ১৮ মাসে শেষ করার কথা থাকলে তা করা সম্ভব হয়নি। এর জেরে ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা। চলতি বর্ষা মৌসুমে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে এ প্রকল্পের কার্যকরিতা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে শহরবাসীর মধ্যে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরসভার তত্ত্বাবধায়নে শহরের একাধিক এলাকায় ড্রেনেজ প্রকল্পের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। কিছু কিছু এলাকায় ড্রেনের কাজ শুরু করে তা ফেলে রাখা হয়েছে। ড্রেন নির্মাণের জন্য কাটা হয়েছে কয়েকটি এলাকার সড়ক। এতে ওই সব এলাকায় আরও ভোগান্তি বেড়েছে।

নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়া ড্রেনের সঙ্গে অপর ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমন্বয় হয়নি। এছাড়াও পুরোনো ড্রেনের সঙ্গে নতুন ড্রেনের সমন্বয় রাখা হয়নি। এতে রাস্তাঘাটে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার অনেক ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা জমে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় বাধা পড়েছে।

পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, গত শুক্রবার থেকে পরের দুদিনে জেলা শহরে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

জেলা শহর ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি কবরস্থান, বাস টার্মিনাল, পুরান বাজার, নিউমার্কেট এলাকা, চরপাড়া, মুসলিমপাড়া, চকবাজারসহ অর্ধশত এলাকায় দেড় থেকে দুই ফুট পানি উঠে প্লাবিত হয়েছে।

শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোরস্থান রোডের বাসিন্দা রফিকুল বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই বসতঘরে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।  শশ্মাণঘাট সংলগ্ন খালটির স্লইজগেট অকার্যকর থাকায় এলাকায় জলাবদ্ধতা লেগেই থাকে। ’

স্থানীয় বাসিন্দা মো. নুরুজ্জামান বলেন, জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে কবরস্থান তলিয়ে যায়।  ভাটার সময় পানি নেমে যায়। এছাড়াও ড্রেনের সঙ্গে সংযোগ থাকার কারণে নদীর পানি সহজে কবরস্থানে ঢুকে পড়ে।

পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাক আহম্মেদ পিনু বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে ড্রেন করা হচ্ছে। এসব কারণে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ বাড়ছে।  তিনি আরও বলেন, নদীতে পানির স্তর বেড়ে যাওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শহরে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করতে হলে পাম্পিং পদ্ধতির বিকল্প নেই।

পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান বলেন, পৌরসভা নাগরিক সুবিধা ও ভোগান্তিকে অগ্রাধিকার না দিয়ে নির্দিষ্ট এলাকায় উন্নয়ন করে অর্থের অপচয় করা হয়েছে। যে কারণে ৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ের ড্রেনেজ প্রকল্প নাগরিকের উপকারে আসছে না। তিনি আরও বলেন, ড্রেনেজ প্রকল্পে ড্রেন টু ড্রেন সংযোগ রাখা হয়নি। আবার ড্রেনের জন্য অনেক এলাকার রাস্তাঘাট কেটে ফেলে রাখা হয়েছে।  ফলে শহরে জমে থাকা পানি নদীতে নামতে পারছে না।

পটুয়াখালী পৌরসভার প্রশাসক মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে শহরে জলবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও পৌর শশ্মানঘাটের একটি স্লইজগেট অকার্যকর ছিল এবং কালিকাপুর এলাকার একটি খালে বাঁধ দিয়ে কালভার্ট নির্মাণের কারণে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। ’

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular